সংবিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা হচ্ছে আইন প্রণয়নে ভূমিকা রাখা। তবে তাদের সাংবিধানিক দায়িত্বের পাশাপাশি আইনগতভাবে আরো অনেক নির্বাহী দায়িত্ব ও রয়েছে । ''জেলা পরিষদ আইন'' এবং ''উপজেলা পরিষদ আইন'' অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের নিম্নোক্ত ক্ষমতা চর্চা করতে পারেন:
৩০৷ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের অধীন নির্বাচিত কোন জেলার সংসদ-সদস্যগণ উক্ত জেলার পরিষদের উপদেষ্টা হইবেন এবং তাঁহারা পরিষদকে উহার কার্যাবলী সম্পাদনে পরামর্শদান করিতে পারিবেন৷
উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ (১৯৯৮ সনের ২৪ নং আইন ):
২৫। (১) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫ এর অধীন একক আঞ্চলিক এলাকা হইতে নির্বাচিত সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য পরিষদের উপদেষ্টা হইবেন এবং পরিষদ উপদেষ্টার পরামর্শ গ্রহণ করিবে।
(২) সরকারের সহিত কোন বিষয়ে পরিষদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে পরিষদকে উক্ত বিষয়টি সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্যকে অবহিত রাখিতে হইবে।
৪২৷ (৩) পরিষদ উহার প্রতিটি উন্নয়ন পরিকল্পনার ৫৬[ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যের সুপারিশ গ্রহণপূর্বক] একটি অনুলিপি উহার বাস্তবায়নের পূর্বে সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে এবং জনসাধারণের অবগতির জন্য পরিষদের বিবেচনায় যথাযথ পদ্ধতিতে প্রকাশ করিতে বা ক্ষেত্র বিশেষে তাঁহাদের মতামত বা পরামর্শ বিবেচনাক্রমে উক্ত পরিকল্পনা সম্পর্কে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে৷
বাংলাদেশে একজন সংসদ সদস্য বেতন-ভাতাসহ নানা ধরণের সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একজন সংসদ সদস্য যেসব সুযোগ-সুবিধা পান সেগুলো হচ্ছে:
-সংসদ সদস্যদের মাসিক বেতন ৫৫,০০০ টাকা
-নির্বাচনী এলাকার ভাতা প্রতিমাসে ১২,৫০০ টাকা
-সম্মানী ভাতা প্রতিমাসে ৫,০০০ টাকা
-শুল্কমুক্তভাবে গাড়ি আমদানির সুবিধা
-মাসিক পরিবহন ভাতা ৭০,০০০ টাকা
-নির্বাচনী এলাকায় অফিস খরচের জন্য প্রতিমাসে ১৫,০০০ টাকা
-প্রতিমাসে লন্ড্রি ভাতা ১,৫০০ টাকা
-মাসিক ক্রোকারিজ, টয়লেট্রিজ কেনার জন্য ভাতা ৬,০০০ টাকা
-দেশের অভ্যন্তরে বার্ষিক ভ্রমণ খরচ ১২০,০০০ টাকা
-স্বেচ্ছাধীন তহবিল বার্ষিক পাঁচ লাখ টাকা
-বাসায় টেলিফোন ভাতা বাবদ প্রতিমাসে ৭,৮০০ টাকা
-সংসদ সদস্যদের জন্য সংসদ ভবন এলাকায় এমপি হোস্টেল আছে।
এছাড়া ২০১৫ -২০১৯ সাল পর্যন্ত একজন সংসদ সদস্য প্রতিবছর চার কোটি টাকা করে থোক বরাদ্দ পাবেন। এই থোক বরাদ্দের পরিমাণ আগে ছিল দুই কোটি টাকা। থোক বরাদ্দের টাকা একজন সংসদ সদস্য তাঁর নিজের পছন্দ মতো উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ করতে পারেন। তিনি কোন প্রকল্পে এ টাকা খরচ করবেন সেটি সম্পূর্ণ তাঁর এখতিয়ার।
স্থানীয় পর্যায়ে কাজের বিনিময়ে খাদ্য, বয়স্ক ভাতা, নানা ধরণের সামাজিক নিরাপত্তা-বেষ্টনী সহ প্রায় ৪০ ধরণের প্রকল্প আছে। এসব প্রকল্প থেকে কারা সুবিধা পাবেন সেটি স্থানীয় সংসদ সদস্যের পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ আছে। এলাকার শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সহ নানা ধরণের প্রতিষ্ঠানে সংসদ সদস্যদের সম্পৃক্ততা থাকে।
18148 views